দ্বীপ জেলা ভোলায় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠা করতে আমাকে একটু বেগ পেতে হয়েছিল। দুই দশক আগে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে চিঠি লিখে শাখা গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করার পর ভোলা জেলা কমিটি গঠন করা হলেও সাংগঠনিক কাজে গতি আনতে পারিনি। এই অবস্থায় ভোলা জেলার দায়িত্ব নেন খাদিজা স্বপ্না ও তপু তালুকদার। গত বছর সাংগঠনিক সফরে গিয়েছিলাম ভোলায়। মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় ভোলা জেলা কমিটির সাথে। আন্তরিক পরিবেশে আলোচনার পর জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সময় সফলতার কারণে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আবার আমাকে দুশ্চিন্তা গ্রাস করে। এইবারেও ভোলার নেতৃত্ব অকার্য্কর হয়ে যাচ্ছে এমনই ধারণা জন্ম নেয় আমার মধ্যে।
শুরু হলো দুই হাজার চব্বিশ সালের জাতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন। ভোলার সাধারণ সম্পাদক তপু তালুকদার প্রতিযোগিতা করবেন এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন। সে মোতাবেক ফরম পাঠানো হয়। কিন্তু সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সকল জেলার প্রস্তুতির খবর পাওয়া গেলেও ভোলার কোন খবর নেই। একদিন মেসেঞ্জারে ছোট্ট একটি মেসেজ পড়ে কিছুটি হতাশা কেটেছে ভোলায় প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিষয়ে। মেসেজটি দিয়েছেন ভোলা জেলা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার আরেক সাংগঠনিক যোদ্ধা ইভান তালুকদার । জানালেন তিনি প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি চলছে। ইভানের কথা বিশ্বাস করতে পারিনি ভোলায় প্রতিযোগিতা হবে। কেননা, সময় এক্বেবারে কম। সর্বোচ্চ চার পাঁচদিন আছে। তিনি বললেন রাতে প্রতিযোগিতা বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
একটি সাদাকালো লিফলেট পাঠিয়ে জানান দিলেন ভোলায় প্রতিযোগিতা হতে যাচ্ছে। এতেও আমি বিশ্বাস রাখতে পারছিনা। অবশেষে ২রা মার্চ প্রতিযোগিতার আয়োজন হলো, ভোলার প্রতিভাবান প্রতিযোগীদের নিয়ে দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার উল্লাস হয়েছে দ্বীপ জেলা ভোলায়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে জাতিরপিতার জন্মদিনে ৩১তম জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব। অল্পসময়ে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন সম্ভব হয়েছে দ্বীপ জেলা ভোলা শাখার তিন সাহসী সাংস্কৃতিক যোদ্ধা ( খাদিজা স্বপ্না, তপু তালুকদার ও ইভান তালুকদারের আত্মপ্রত্যয়ী ভূমিকার কারণে। খাদিজা স্বপ্না রাজনীতির সাথে জড়িত হলেও আপাদমস্তক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তপু তালুকদার পেশায় উদীয়মান সাংবাদিক। আর ইভান তালুকদার একসময়ের বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী । পেশায় শিক্ষক। তিনজনের অনমনীয়, একাগ্রতা ও আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাবের কারণে স্বল্পসময়ে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করি। তাদের আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব যদি ধরে রাখতে পারে, তাহলে দ্বীপ জেলায় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংগঠনিক বিপ্লব ঘটবে।
কেন্দ্রীয় মেলার পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা ভোলা জেলার এই তিন যোদ্ধাকে জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আমার বিশ্বাস দীর্ঘ দুই দশকে ভোলায় যে সাংগঠনিক বন্ধ্যাত্ব ছিল তা গুছিয়ে উঠে দ্বীপের আনাচে কানাচে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ে উঠবে। সেই প্রত্যাশা রেখে