can't preview the image.

কিভাবে আমি শিশু সংগঠক হলাম'

‘বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’ গঠন ও কিছু স্মৃতি

(তৃতীয় পর্ব)

.

বঙ্গবন্ধু শিশু কি্শোর মেলা সাংগঠনিক কাজ শুরু হলো স্বৈরাচার বিরোধী তীব্র আন্দোলনের মধ্যে

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠার সংবাদ পরদিন থেকে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। বিশেষ করে খবর গ্রুপের সকল সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে ব্যাপক প্রচার হয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠার সংবাদ।সেই সাথে আহবান জানানো হয় আগ্রহীরা শাখা গড়ে তুলতে।বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলাপ্রতিষ্ঠার পরদিন থেকে আমাদের সাংগঠনিক ব্যস্ততাও বেড়ে যায়। শাখা করার উদ্যোগ, গঠনতন্ত্র তৈরী করা। অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয় আমার বাসার ঠিকানা।অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার অস্থায়ী ঠিকানা৩৯, শান্তিবাগ,ঢাকা। 

উপদেষ্টা সংগ্রহ

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠার সময়টা খুব ভাল যাচ্ছিলনা। এক বড় দুঃসময়ে জন্ম হলো জাতির জনকের নামে বাংলাদেশের এই শিশু সংগঠনের। স্বৈরাচার আন্দোলনের চুড়ান্ত মূহুর্ত্। তখন দিনের পর দিন হরতাল। আন্দোলনে স্বৈরাচারের ভিত নড়ছে সেই ৯০ এর প্রথম থেকে। আর এই দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠা করে সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন।মিছিল হরতাল অবরোধ আর সেই সব আন্দোলনে মৃত্যুর মিছিল নিত্য দিনের ঘটনা। কিন্তু আমরা থেমে নেই এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কাজ। একটাই লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। উজ্জীবিত করতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে। দীর্ঘ বছর স্বৈরাচারে যাতাঁকলে নিষ্পেষিত পুরো জাতি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতে কিছু নেই। ঈষ্পাত কঠিন দৃঢ়তা; আমাদের সফল হতেই হবে।যখন সুযোগ পাই তখন বেরিয়ে পড়ি উপদেষ্টা সংগ্রহে। প্রত্যেকের ফরম পূরণ ছাড়া কোন উপদেষ্টা নয়। যে কারণে আমাদের প্রস্তাবিত সকল উপদেষ্টার বাসা বা অফিসে গিয়ে সম্মতি নিতে হয়েছে। উপস্থিত থেকে সম্মতি আদায় এবং প্র্ত্যেকের ছবি ক্যামেরা বন্দী করা এই অন্য রকম অনূভুতি।

একদিন উপদেষ্টা সংগ্রহ করতে গিয়ে জানতে পারি আজ বায়তুল মোকাররমে আওয়ামী লীগের জনসভা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাংলা একাডেমী। সেই বাংলা একাডেমী থেকে কবি আসাদ চৌধুরীর দস্তখত সংগ্রহ করে আমি আর মানু ফিরছিলাম দৈনিক ইত্তেফাকে। সেখানে প্রস্তাবিত দুজন উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান মিলন মহাদেব সাহার ঠিকানা। বাংলা একাডেমী থেকেরামকৃঞ্চ মিশন রোডে যাবার পথে বায়তুল মোকাররমে জনসভা আওয়ামী লীগের। শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। আমি মানুকে বললাম আজ আমাদের মিশন শেষ করতে হবে এখানে। আমি জনসভায় যোগ দেবো। রিক্সা থেকে নেবে দুজন জনতার কাতারে মিশে গেলাম। তারপর আমার ক্যামেরা সচল হয়ে উঠলো।তারপর প্রয়োজনীয় ছবি ক্যামেরা বন্দী করে বাড়ী ফেরা দুজনের। এভাবেই চলছিল বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কার্য্ক্রম।

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কারণে নিরাপত্তার শঙ্কা নিয়ে রাস্তায় বের হতে হয়।তবুও আমাদের কাজ থেমে নেই।প্রতিদিন কোন না কোন উপদেষ্টার সম্মতি আদায় চলছে।

যে স্বৈরাচার আগমনের কারণে বাড়ী ছেড়েছি এবার স্বৈরাচার তাড়াতে নিজের ভূমিকা রাখতেই হবে।সাংগঠনিক জীবন ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে নিজেকে একজন শিশু সংগঠক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টাই শুধু্ ছিল আমার মধ্যে।১৯৮২ সালে মার্শাল জারি হবার পর ঢাকায় চলে এসে কর্ম্ জীবন শুরু করাও কঠিন ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হবার পর বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের কবর রচনা হলো তা এদেশের মানুষ জানে। তাই এরশাদের ক্ষমতা গ্রহন কে্ ভাল চোখে দেখেনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে জনগন রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছেএরশাদ ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে ।যে স্বৈরাচার আমাকে ছাত্র রাজনীতি ছাড়তে বাধ্য করেছে, সেই স্বৈরাচার যতই পরাক্রমশালী হোক না কেনো? আমার লেখনি আরো দৃঢ়চেতা করার চেষ্টা করেছি। 

১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী স্বৈরাচার এরশাদ ছাত্র জনতার মিছিলে পুলিশের গাড়ি তুলে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সেলিমদেলোয়ারকে হত্যা করেছিল।সেইদিন বিশ্ববিদ্যালযের ছাত্রদের মিছিল যখন গুলিস্তান অতিক্রম করছিল, স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট পুলিশ বাহিনী ছাত্র জনতার মিছিলেপুলিশের গাড়ী তুলে দিয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল।সেদিনে সেলিমদেলোয়ারের মৃত্যু আমার যুব মনে রেখাপাত করেছিল তীব্রভাবে। তখন স্বৈরাচার এরশাদ শাহীর বিরুদ্ধে আমার কলম হয়ে উঠে আরো প্রতিবাদী।আরো আগ্রাসী। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কার্য্ক্রমের পাশাপাশি প্রতিবাদী লেখকদের সাথে যোগ দিয়ে স্বৈরাচার আন্দোলনে শরিক হই। সেই সাথে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কাজও এগিয়ে নিয়ে যাই।

সেলিমদেলোয়ারের মৃত্যুর পর আমি আমার লেখায় স্বৈরাচারের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। লিখেছিলাম আমার প্রতিবাদী ছড়ামিছিল


মিছিল

কাল বিকেলে হাজার লোকের মিছিল হলো রাজপথে

মিছিল গেলো হঠাৎ থেকে যখন এলো মাঝপথে।

ভাত কাপড় আর বাসস্থানের শ্লোগান ওরা দিচ্ছিল

গুলিস্তানে পুলিশ এবং বিডিয়ারের ভিড় ছিল। 

ইট পাথর আর রাইফেলের খুব গুলি বিনিময় হলো

মিছিলকারী চৌদ্দজনের অকালে প্রাণ ক্ষয় হলো। 

হাজার হাজার মানুষ আরো যোগ দিয়েছে বিক্ষোভে

বদল নেবার শব্দ ধ্বনি কাঁপছে চতুর্দিক ক্ষোভে।

.

যেদিন থেকে কর্মী আর উপদেষ্টা সংগ্রহ করার গুরু দায়িত্ব আমি আর মহীউদ্দিন মানুর কাঁধে নিয়েছি সেদিনটির কথা মনে নেই।সংগঠনের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাবতে লাগলামএতোগুলো উপদেষ্টার দস্তখত কিভাবে সংগ্রহ করবো?অনেক কঠিন কাজ। সবার বাসা বা অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করতে হবে।যাহোক, তবুও সাহস বেধেছি বুকে।সাহস হারাইনি।পরিকল্পনা করে মাঠে নেমে পড়লাম।


পরদিন তালিকা ধরে উপদেষ্টাদের সম্মতি নেবার জন্য আমি আর মহীউদ্দিন মানু বেরিয়ে পড়লাম। সবার ঠিকানা সংগ্রহে ছিলনা। বিভিন্ন জন থেকে তা নিয়ে আমরা কাজে নেমে পড়েছি। দুই বন্ধুর ঈস্পাত কঠিন দৃঢ়তা। সব উপদেষ্টাদের সম্মতি সংগ্রহ করবোই। উপদেষ্টাদের সম্মতি নেবার সময় বিশেষ মূহুর্ত্টা স্মৃতিময় করে রাখতে ক্যামেরা সার্ব্ক্ষণিক সাথে থাকে। বিশেষ মূহুর্ত্টি ক্যামেরা বন্দী করবোনা তা কি করে হয়?


ক্যামেরা কিনেছিলাম বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠার আগের দিন। ক্যামেরা কেনার জন্য হাজার টাকা চেয়ে নিলাম মানুর কাছ থেকে। হাজার টাকায় বায়তুল মোকাররম ইলেক্ট্রনিক মার্কেট থেকে কিনে নিলাম একটি ইয়াসিকা এফ এক্স ক্যামেরা। সে ক্যামেরা কাঁধে ঝুলিয়ে শুরু হলো আমাদের মিশন।

প্রস্তাবিত নামের তালিকার মধ্যে প্রথমেই . নীলিমা ইব্রাহিমের নাম। কাকরাইল থাকেন তিনি।প্রথমে তাঁর বাসায় যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। ফোন করতেই তিনি রিসিভ করলেন। স্বল্প কথায় বিস্তারিত বলার পর তিনি বাসায় যেতে বললেন।উপদেষ্টা সংগ্রহে প্রথমেই হোঁচট খেতে হলো।ড. নীলিমা ইব্রাহিমের বাসার দরজার কলিং বেল টিপতেই দরাজ কন্ঠ ভেসে এলো দরজার ওপার থেকে। কে….?দরজা খুলে কিছু বলার আগেই প্রশ্ন করে বসলেন ভদ্রলোক, কাকে চাই?কোত্থেকে আসছেন?কার কাছে আসছেন? . নীলিমা ইব্রাহিমের কথা বলতেইতিনি নাইবলেই দরজা বন্ধ করে দিলেন। ধারনা করলাম উনি ডাঃ ইব্রাহিম হতে পারে। একটু হতভম্ব হলাম। বুঝলাম না তিনি এমন কেন করলেন? তাঁর সম্পর্কে ধারনা নেই আমাদের।ঘন্টা খানেক পর আবার ফোন করলাম। আন্টি ফোন ধরে বললেন তোমরা এসো।আমরা দ্রুত চলে গেলাম। এবারও ভদ্রলোক দরজা খুললেন।উনার পেছনে . নীলিমা ইব্রাহিম দাড়িয়ে।তিনি আগ বাড়িয়ে বলে উঠলেন, তোমরা কি আমার কাছে এসেছো? হ্যা উত্তর দিতেই তিনি আমাদের ভিতরে যেতে আমন্ত্রণ জানালেন। . ইব্রাহিম আর কিছু না বলে চলে গেলেন ভেতরে।কথা বলা শুরু করলাম . নীলিমা ইব্রাহিমের সাথে। আন্টি সম্মোধন করে সংগঠন বিষয়ে বিস্তারিত বলতেই উপদেষ্টা হতে রাজী হয়ে গেলেন। ফরমে দস্তখত করলেন। তারপর আমাদের জানালেন বিদায় সম্ভাষন।ড. ইব্রাহিমের বিষয়ে আন্টি ভুল ভাঙ্গিয়ে দিলেন, আন্টি অসুস্থ তাই কারো কথা বলতে দেননা বলে প্রথমবার আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরীর লন্ডন প্রবাসী। তিনি প্রতি বছরই দেশে আসেন থাকেন গেন্ডারিয়া। শ্রদ্ধেয়বিমান দা আবদুল গাফফার চৌধুরীর ঠিকানা সংগ্রহ করেছেন। তাঁর বাংলাদেশের আসার সংবাদ শুনে ছুটির দিনে এক সকালে বিমানদা সহ গেন্ডারিয়ার বাসায় গেলাম।তিনি আমাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। 


উপদেষ্টাদের মধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনের সম্মতি অর্জনে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। তাঁর ঠিকানা সংগ্রহ করতে পারছিলাম না।শেষতক সুপ্রিম কোর্টে এক পিয়নের দারস্থ হই। তার কাছ থেকে সংগ্রহ করি ঠিকানা। ধানমন্ডির ১৫ নম্বরে কামালউদ্দিন সাহেবের বাড়ী। দীর্ঘ্কায় এক মানুষ। আমরা আমাদের পরিচয় দিতেই অনুমতি দিলেন বাসায় প্রবেশ করতে। বিচারপতির দায়িত্ব থেকে অবসর নেবার পর যে কক্ষে তিনি অবসর সময় কাটান সেই কক্ষেই বসালেন আমাদের দুজনকে। শুরু হলো তার সাথে আলাপচারিতা।আমাদের কথা শোনার পর তিনি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কথাই বললেন। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা গঠনের ক্ষেত্রে অনেক মতামত দিলেন। তারপর বিদায় নেবার মূহুর্তে জানতে চাইলেনতোমরা কি সংগঠনের কোন পাঠাগার করবে? হ্যা জবাব দিতেই বললেনপাঠাগারের জন্য কিছু বই নিয়ে যাও, / টি বিভিন্ন ধরনের বই দিলেন। তম্মধ্য বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই বেশী ছিল।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন একটি শিশু সংগঠন করার উদ্যোগকে প্রত্যেকে স্বাগত জানিয়েছে। আমাদের উদ্যোগের প্রশংসা করে তাঁরা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর পরই এই উদ্যোগ কেউ নাকেউ  নেয়ার কথা ছিল। সাহস করেনি কেউ। এই দুঃসময়ে তোমাদের সাহসী উদ্যোগে আমরাও সামিল হতে পেরে গর্বিত।এমন কথাই বললেন নব গঠিত জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টারা।


ইসলামী ফাউন্ডেশন এর পরিচালক শিশু সাহিত্যিকমসউদউশশহীদ এর সাথে লেখালেখির সূত্রে অনেক আগেই পরিচয়। বলা যায় আমার বড় ভাই বন্ধু। তাকে অনুরোধ করেছিলাম অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল এমন কিছু উপদেষ্টা প্রয়োজন। তিনি চট্টগ্রামের তাঁরই বন্ধু জহীর কাজীর নাম ঠিকানা দিয়ে যোগাযোগ করতে বললেন। একদিন চট্টগ্রামে জহীর কাজীর অফিসে গেলাম তাঁকে উপদেষ্টার সম্মতি নিতে। অফিসে না পেয়ে অনেকক্ষণ বসতে হলো। এক সময় তিনি এলেন। ক্লান্ত জহীর ভাই আমাকে একটু বিরক্তস্বরে জানতে চাইলেন, কার কাছে আসছি? পরিচয় পাবার পর তার কাছ থেকে যে আন্তরিকতা পেয়েছি, তা বলার মতো নয়।বলা যায় জহীর ভাই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উপদেষ্টা হলেও তিনিও আমাকে বন্ধুর মতো সমাদর করতেন।তিনি থাকেন চট্টগ্রামে থাকলেও সংগঠনের যে কোন প্রয়োজনে সহকর্মীর মত কথা বলতেন। বিভিন্ন পরামর্শ্ দিতেন।


হারূন থাকতেন হাটখোলা। বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক। আমি যখন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা করতাম তখন হারূন ভাইয়ের একটি ইন্টারভীউ নিয়েছিলাম। সেই থেকে তাঁর সাথে সখ্যতা। তারপর বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক্ গড়ে উঠে।

. ইনামুল হক লাকী ইনাম থাকতেন বুয়েট কোয়ার্টারে। . ইনামুল হক বুয়েটের শিক্ষক হিসেবে কোয়াটারে থাকতেন। একদিন সন্ধ্যায় আমি আর মানু তার বাসায় হাজির। তাঁর কাছে আসার কারণ জানতে চাইলেন। বঙ্গবন্ধুর নামে সংগঠন হচ্ছে শুনে কী খুশী। মুহুর্তেই সম্মতিপত্রে সাক্ষর করলেন।বিনয়ের সাথে(অভিনয় ভঙ্গিতে) বললেন তোমার আপাকে রাখবানা? অর্থ্াৎ লাকী আপা পাশেই বসা। রাখবো না মানে! লাকী আপার কাছ থেকেও উপদেষ্টার সম্মতি গ্রহন করি। 


কবরী সারোয়ার কে উপদেষ্টা করতে উনার বাসায় যাবার সময় আমাদের সাথে যোগ দিলেন মঞ্জুশ্রী সরকার, মরিয়ম সিদ্দিকা মেরী, শিরিন আক্তার মঞ্জু, আমি, মানু, হেলাল, আনন্দ দা। বনানীর কাকলিতে বাসা।দুপুর এর দিকে হবে। ফোন করে আগেই সময় নিয়েছিলাম। সকাল ১১টায় যাবার কথা। আমরা পৌছুঁতেই ১২টা পার হলো। আপা তখন কি কাজে বাইরে যাচ্ছিলেন। একটু বিরক্তবোধ করে বললেন, আমি এখন কথা বলতে পারবো না। উনি গাড়ীতে উঠার মূহুর্তে উপদেষ্টা ফরমটা এগিয়ে ধরে বললামআপা, ফরমটা একটু পড়ে সই করে রাখবেন্।আমরা এসে নিয়ে যাবো। কবরী আপা আমাদের দৃষ্টির বাইরে চলে যাবার পর ।মঞ্জু দি(মঞ্জুশ্রী সরকার)অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে বলে উঠলেনআমরা আপুর মিষ্টি হাসিটা দেখতে পেলামনা।মঞ্জুদির কথা শুনে হাসিতে সবাই লুটুপুটি খাচ্ছি।উপদেষ্টা সংগ্রহের আরো কতো সুখস্মৃতি আছে তা প্রলম্বিত করা হলে স্মৃতিকথাকে আরো দীর্ঘায়িত করবে।

একমাসের মধ্যে ৩০ জন উপদেষ্টার সম্মতি সংগ্রহ করা কঠিন ছিল।তবুও আমরা দ্রুততম সময়ে উপদেষ্টাদের সংগ্রহ করতে পেরেছি।


উপদেষ্টাদের তালিকায় যাঁদের সম্মতি আদায় করলাম তারা হলেন- 

  • সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন (প্রয়াত)
  • বিচারপতি কে এম সোবহান(প্রয়াত)
  • . নীলিমা ইব্রাহিম(প্রয়াত)
  • শওকত ওসমান(প্রয়াত)
  • কবি শামসুররাহমান(প্রয়াত)
  • এম আনিসুজ্জামান(প্রয়াত)
  • আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
  • মুস্তাফা সারওয়ার(প্রয়াত)
  • . মযহারুল ইসলাম(প্রয়াত)
  • কলিম শরাফী(প্রয়াত)
  • ইকবাল সোবহান চৌধুরী
  • . দুর্গাদাস ভট্টাচার্য্
  • সন্তোষ গুপ্ত(প্রয়াত)
  • রাহাত খান
  • সারাহ বেগম কবরী
  • আসাদ চৌধুরী
  • কবি মহাদেব সাহা
  • কবি রফিক আজাদ(প্রয়াত)
  • হাবিবুর রহমান মিলন(প্রয়াত)
  • আলহাজ্ব মোঃ জহিরুল হক(প্রয়াত)
  • কবি শামসুল ইসলাম(প্রয়াত)
  • . ইনামুল হক 
  • হারুন
  • মশউদউশশহীদ
  • লাকী ইনাম
  • এম গনি
  • জহীর কাজী
  • ডা. ফিরোজা বেগম
  • সেলিম নজরুল হক প্রমুখ
  • দীপেশ চৌধুরী
  • সালমা চৌধুরী
  • সালেহ আহমেদ


বিশেষ অনুরোধ:

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার  প্রতিষ্ঠার ইতিকথাসংগ্রহে রাখার জন্য সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার মতামত আমাকে উৎসাহ প্রেরণা যোগাবে। আর সংগঠনের দুর্ল্ভ ছবি বা যে কোন তত্ত্ব দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ রইলো।

ছবিকয়েকজন উপদেষ্টার ছবি সংরক্ষণে না থাকায় দিতে পারিনি। এজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।