can't preview the image.

কিভাবে আমি শিশু সংগঠক হলাম'

‘বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’ গঠন ও কিছু স্মৃতি

(দ্বিতীয় পর্ব)

 

1.

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কর্মী সংগ্রহ

 

মনের মাঝে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করেছিলাম ১৯৮৬ সালে শাপলা কুঁড়ির আসরের সম্মেলনের পর থেকে।যুব নেতা শেখ মনি প্রতিষ্ঠিত শাপলা কুঁড়ির আসর ১৫ আগষ্ট হত্যাকান্ডের পর নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।১৯৮৬ সালে আবার সক্রিয় করার জন্য আমি উদ্যোগ গ্রহন করি।নতুন পুরাতন অনেককে জড়ো করতে আমি সমর্থ্ হই। ৩ নভেম্বর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় কেন্দ্রীয় সম্মেলন। অজ্ঞাত কারণে শিশু সংগঠন করতে অভিজ্ঞ সংগঠকদের বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। সম্পূর্ণ্ নতুনদের নিয়ে গঠন করা হয় শাপলা কুড়িঁর আসরের কেন্দ্রীয় কমিটি। শুধু এক কি দুজন পুরানো সংগঠকদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়া হয়। আমার ধারণা ছিল আমি যেহেতু সবাইকে এক কাতারে জড়ো করে শাপলা কুঁড়িকে আবার সক্রিয় করার চেষ্টা করেছি। তারা নিশ্চয়ই পুরানোদের বাদ পড়ার বিরুদ্ধেপ্রতিবাদ জানাবেন।বিশেষ করে আমাকে কমিটিতে অবমূল্যায়ন মেনে নেবেন না।  

 

সেদিনের আমার স্নেহভাজনপ্রিয়ভাজন শ্রদ্ধাভাজন যারা নতুন কমিটিতে বড় বড় পদে সমাসীন হলেন, ত্যাগী সংগঠকদের কমিটি থেকে বাদ দেবার জন্য প্রতিবাদ তো করেই নি, অনেকেই খুশীতে এতটাই উচ্চ্বসিত ছিল যে, নিজের চোখের সামনে শুভেচ্ছা বিনিময় দেখে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেবার মতো মনে হলো আমার। সেদিন আমার সহকর্মীদের যাদের বাদ দেয়া হলো তারা হলেন ওবায়েদ আনন্দ, দেলোয়ার বিন রশিদ ও সৈয়দ শফীউল আজম হেলাল। উপযুক্তদের বাদ দিয়ে নতুনদের নিয়ে কমিটি করলেও দুঃখ ছিলনা, যদি সংগঠন ঠিক মতো চলতো। কালেরক্রমে বিভিন্ন শিশু সংগঠন সাংগঠনিকভাবে ঝিমিয়ে পড়লেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শিশু সংগঠন টিকে আছে এখনো। শুধু ব্যতিক্রম শাপলা কুঁড়ির আসর। যে সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ্ কে ধারণ করে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই সংগঠন কিনা শুধু মাত্র যোগ্য নেতৃত্বের কারণে কালের গর্ভে হারিয়ে গেলো? যারা দায়িত্বে থাকা অবস্থায় শাপলা কুঁড়ির আসর সাংগঠনিক কার্য্ক্রম থেকে হারিয়ে গেলো সেই সব বন্ধুরা আমার এই লেখা পড়ে হয়তো আমার উপর রুষ্ট হবেন, তবে বাস্তবতা তাদেরও মানতে হবে। অভিভাবক বিহীন কোন প্রতিষ্ঠান এগুতে পারেনা। শাপলা কুঁড়ির আসর আমার প্রাণের সংগঠন। এই সংগঠন মাথা উঁচু করে দাড়াক সেই প্রত্যাশা করি।

 

যাহোক সেই অভিমান থেকে সংগঠন করার একটি সুপ্ত বীজ বপন করতে থাকি। যা রূপ লাভ করে স্বৈরাচার পতনের বছরে।তখন স্বৈরাচার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। নিজেকে সামিল করলাম স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে।রাজপথের লড়াকু রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি শব্দ সৈনিকেরাও তাদের শানিত লেখনিনিয়ে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে নেমেছিল। আমিও লেখক পরিবারের একজন নগন্য সদস্য হিসেবে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। 

 

১৯৮৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সড়ক দ্বীপে আমার একক স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মিয়া মনসফের পারমানবিক কবিতা শিরোনামে আয়োজিত কবিতার অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ঢল নেমেছিল কবিতা শোনার জন্য।সেই অনুষ্ঠানে শাপলা কুঁড়ির আসরের দুই শিল্পী তাসলিমা সুলতানা ডলি হালিমা সুলতানা পলি। ওরা দুই বোন।ওবায়েদ আনন্দের উপাস্থাপনায় আমি স্বরচিত প্রায় অর্ধ্ব শতাধিক ছড়া কবিতা পাঠ করেছিলাম।স্বৈরাচারের উপর দেশের জনগন কতটা বিরক্ত ছিল আমি একটি অনুষ্ঠান দিয়ে বুঝেছি। প্রতিটি ছড়া কবিতায় ছিল স্বৈরাচারকে নিয়ে লেখা।দর্শ্ক শ্রোতা সব কটি কবিতা ছড়ায় করতালি দিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। কামানের চিৎকার গ্রন্থের––” “বাহ্ কি চকৎকার ছড়াটি ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়।

নব্বইয়ের স্বৈরাচার আন্দোলনের পাশাপাশি সংগঠনের কর্মী সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা জনেই যার যার পরিচিতদের সাথে যোগযোগ করে কর্মী সংগ্রহের দায়িত্ব নেই। কিন্তু মেয়ে কর্মী সংগ্রহ একটু কঠিন মনে হলো। হঠাৎ মেয়ে কর্মী সংগ্রহের একটা কৌশল মাথায় আসলো।

১৯৯০ সালে আমার দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। একটি আমার নিজের গ্রন্থকামানের চিৎকার’, আরেকটি আমার সম্পাদিত ছোটদেররিনিঝিনি এই রিনিঝিনির জন্য লেখা আহবান করেছিলাম ১৯৯৭ সালের নভেম্বর ডিসেম্বরে। রিনিঝিনির তে অনেক নবীন প্রবীণ লেখা পাঠিয়েছেন।স্বৈরাচারকে নিয়ে আমার প্রথম গ্রন্থকামানের চিৎকারএবং স্বনামধন্য লেখকের লেখা নিয়ে রিনিঝিনি প্রকাশিত হয় নব্বইয়ের ফেব্রুয়ারীতে বাংলা একাডেমীর বই মেলায়।

সেই রিনিঝিনিতে যারা লেখা পাঠিয়েছে কিন্তু ছাপানো সম্ভব হয়নি এমন লেখার সংখ্যাও কম নয়। সেই  সব লেখার সূত্র ধরে প্রায় জন মেয়ে লেখকের কাছে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার বিষয়ে অবগত করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে পত্র লিখি। তম্মধ্যে তিনজন কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী পারভীন নাহার, মীরপুর বাংলা কলেজের ছাত্রী সেলিনা আর্জমান্দ বানু শর্মী, তেজগাঁও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শিরিন আক্তার মঞ্জু। তখন তাদের সাথে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নেই। প্রথমে খিলগাঁও কলোনীতে শিরিন আক্তার মঞ্জুর বাসায় যাই আমি, মহীউদ্দিন মানু এবং সৈয়দ শফীউল আজম হেলাল। কলিংবেল বাজাতেই শিরিন দরজা খুলে দিলেন। আমাদের পরিচয় জেনে বসতে দিলেন। তারপর বাবা মায়ের সাথে পরিচয় পর্ব্ শেষে সংগঠন করার বিষয়ে আলোচনা হলো এবং নিজের সম্মতির কথা জানালেন।

তারপর পরদিন আমি মানুসহ গেলাম শারমিন হোসেন শর্মীর বাসায়। মীর এক নম্বরে সরকারী বাসায় থাকে। আমরা দুই তরুন শর্মীর সাথে দেখা করতে গেলে ওর বাবা একটু বিরক্ত হলো বলে মনে হলো। শর্মী স্বাধীনচেতা। সে বাবাকে বললো উনারা আমার কাছে এসেছে।এই বলে আমাদের বসার ব্যবস্থা করলোকুশল বিনিময় করে আমাদের আপ্যায়ন করালো এবং সংগঠন করার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিল।

রোকেয়া হলের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী পারভীন নাহারও তার ইচ্ছের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় ঠিকানায়। এছাড়া কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ইসলামী ফাউন্ডেশনের পরিচালক মসউদউশশহীদ মঞ্জুশ্রী সরকার নামে একজনের নাম দিলেন। তিনিও সংগঠন করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করার পর মোটামুটি একটি কমিটি রূপ দেবার মতো কর্মী সংগ্রহ প্রায় শেষ। নুতন কমিটির জন্য নিজেই সংগ্রহ করি ১১ জন সদস্য।

.

 

আমরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় বিমানদার অফিসে মিলিত হতাম। যোগাযোগের সুবিধার্থে বিমান দা দৈনিক বাংলা গ্রুপের ইংরেজী দৈনিকবাংলাদেশ টাইমসহচ্ছে সবচেয়ে সহজ যোগাযোগ। মানু থাকতো ব্যবসায়িক প্রয়োজনে হোটেলে। আমরা জন এখানে মিলিত হয়ে বিমানদা(বিমান ভট্টাচার্য্) এর সাথে দেখা করে পরদিন কর্ম্ পরিকল্পনা ঠিক করলাম। জনাব এম আনিসুজ্জামানসহ ধানমন্ডিতে মিজানুর রহমান মিজানের বাসায় যাবো। মিজানু রহমান মিজানের সাথে কথা বলে মিটিং করার্ একটা তারিখ ঠিক করে আমাদের জানাবেন। এই কথা এম আনিসুজ্জামান আমাদের বললেন। সেই মিটিং থেকেই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করার ঘোষনা আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া হবে। ৩১ জুলাই রাতে আনিস ভাইকে ফোন করলাম। আগষ্ট সকাল ১০টায় মিজান ভাইয়ের বাসায় মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত হলো। আমরা সবাই ঐদিন সকালে বাংলাদেশ টাইমসে মিলিত হয়ে সোজা চলে গেলাম মিজানুর রহমান মিজানেরধানমন্ডির ১নম্বর সড়কের বাসায়।সময়টা সকাল ১০টা থেকে সাড়ে দশটা হবে। ইতিমধ্যে এম আনিসুজ্জামান সাহেবও এসে উপস্থিত। তারপর বিস্তারিত কথা হলো।যে সকল উপদেষ্টাদের সম্মতি নেয়া গেছে তাদের ফরমগুলো উপস্থিত সবাইকে অবহিত করা হলো। তারপর দীর্ঘ্ আলোচনা হলো সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্ম্ পন্থা নিয়ে। তারপর উপস্থিত সকলের সর্ব্সম্মতিক্রমে নিম্নোক্ত কমিটি গঠন করা হয়।

 

কমিটি নিম্নরূপঃ

 

প্রধান উপদেষ্টাএম আনিসুজ্জামান

প্রধান পৃষ্ঠপোষকমিজানুর রহমান মিজান

 

সভাপতিশ্রী বিমান ভট্টাচার্য্

সহসভাপতিমহীউদ্দিন মানু

সাধারণ সম্পাদকওবায়েদ আনন্দ

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদেলোয়ার বিন রশিদ

সাংগঠনিক সম্পাদকমিয়া মনসফ

সাংস্কৃতিক সম্পাদকসৈয়দ শফীউল আজম হেলাল

সমাজকল্যাণ সম্পাদকপারভীন নাহার

দফতর সম্পাদকমরিয়ম সিদ্দিকা মেরী

অর্থ্ সম্পাদকশিরিন আক্তার মঞ্জু

প্রকাশনা সম্পাদকজামালউদ্দিন হোসেন বান্না

পাঠাগার সম্পাদকজাকির তালুকদার

 

সদস্যতাসলিমা সুলতানা ডলি, নজরুল ইসলাম রতন, সাদিয়া মাহবুব এমি, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, ফায়সাল হোসেন খান সিজার, মাহফুজুল হক, তকুল রানা, হালিমা খাতুন পলি। 

 

সর্ব্ সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপরোক্ত কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে সর্ব্কালের সর্ব্ শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বাংলাদেশের একমাত্র জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠনবঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা জন্ম হলো। 

১৯৯০ সালের ৩রা আগষ্ট শুক্রবার তারিখটি ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিলো। আর সেই ঐতিহাসিক মূহুর্তের ছবিগুলো আমি ক্যামেরা বন্দী করার পর অটো সুইজ দিয়ে আমাদের সকলের দুটি সেলফি ক্লিক করা হলো।যা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠার প্রামাণ্য দলিল। 

 

আমি মহীউদ্দিন মানু কেন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হলাম না

 

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা যখন প্রতিষ্ঠা লাভ করে, আমার আর মানুর তখন যুব বয়স। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা জাতির জনকের নামে একটি শিশু সংগঠন প্রতিষ্ঠ করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নই ছিল আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। পদ পদবীর কথা ভাবিনি। সংগঠনকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের কথা ভাবিনি। লক্ষ্য উদ্দেশ্য ঠিক রেখে বর্তমান ভবিষ্যত বংশধরদের কাছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ্ তুলে ধরাই একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আমাদের।সে প্রত্যাশা অর্জ্নই যখন আমাদের  উদ্দেশ্য ছিল, তখন অভিজ্ঞতা বয়োজ্যেষ্ঠ কাউকে সংগঠনের দায়িত্ব দেয়াই আমরা দুজন শ্রেয় মনে করেছি। যেকারণে আমার শিশু সংগঠনের গুরু বিমান ভট্টাচার্য্ এবং ওবায়েদ আনন্দের মতো শিশু সংগঠন করার অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে পদের জন্য যোগ্য মনে করেছি। আমরা তখন আরো সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন নিজেদের যোগ্য মনে করবোনা ততদিন সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আসবোনা। বঙ্গবন্ধুর নামে সংগঠন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত যথার্থ্ বলে মনে করি। 

 

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কর্মসূচী

 

.

কদিন পরেই ১৫ই আগষ্ট। শোক দিবসে কি কর্ম্সূচি নেয়া যায় তা আলোচনা করতে আমরা পরদিন বিমানদার অফিসে মিটিং করি। সব চিন্তা করতে থাকি। নতুন সংগঠন। নেতা কর্মী আমরা জন। একটা অনুষ্ঠান করতে তো নেতা কর্মী লাগবে। আর্থিক বিষয়টা তো আছেই। কি করা যায় ভাবছি। পরে সর্বসিদ্ধান্ত হলো ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবো। বিমান ভট্টাচার্য্, ওবায়েদ আনন্দ, মহীউদ্দিন মানু, মরিয়ম সিদ্দিকা মেরী তার ছোট বোন সামিয়া, সাদিয়া মাহবুব এমি, ছোট্ট সানজু আমি। মোট আটজনের মৌন মিছিল একটি ফুলের তোড়া নিয়ে মীরপুর রোড থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দিকে। আজকের দিনের মতো ৩৩ বছর আগে এতো ভিড় নেই ধানমন্ডির বত্রিশে। মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজমান। দীর্ঘ্ বছর স্বৈরশাসনের আমলেও বঙ্গবন্ধু শাহাদাত বরণ করার পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির ধারা অব্যাহত ছিল।শুধু কি তাই প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ করার মতো সাহস কয় জনেরই বা ছিল? তবুও জাতির জনকের নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা হবার মাত্র ১২ দিনের মাথায় জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো্ আমাদের জন্য ছিল প্রেরণা। কলাবাগান নিউ মডেল কলেজের সামনে থেকে ধীর গতিতে হাটতে হাটতে এগিয়ে যাচ্ছি বত্রিশ নম্বরে অবস্থিত জাতির পিতার প্রতিকৃতির দিকে। সে যে কী চেতনা। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রথম কর্ম্সূচী হিসেবে স্মৃতি ধরে রাখতে আমি ব্যাগ থেকে ক্যামেরা বের করলাম। জনের টিমের ৭জনকে নিয়ে আমার ক্যামেরার লক্ষ্য বস্তু। কিন্তু সেই ছবিতে আমি ইতিহাস হতে পারিনি। ছবি আমাকে তুলতে হবেই। তখন নিজের ছবির কথা ভাবিনি। ভেবেছি ইতিহাসের প্রয়োজনে একটি ছবির প্রয়োজনীতার কথা। দুটি ছবি ক্লিক করলাম। আর এই ছবি বাংলাদেশের তৎকালিন প্রত্যেক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হলো পরদিন।বলে বোঝাতে পারবোনা প্রথম কর্ম্সূচী পালনের সংবাদ প্রকাশে কী আনন্দ। কত পত্রিকায় ছাপা হলো এতো হিসাব কি রাখতে পারি? তবে আত্মতৃপ্তি লাগছে এই জন্যই, যে স্বৈরাচার পতন আন্দোলন তুঙ্গে তখন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠা হয়েছে।সেই চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে চললো বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার পথযাত্রা। সে যাত্রা যত কঠিন হোক আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছুতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের সেই অভিযাত্রায় আস্তে আস্তে সামিল হতে লাগলো সারাদেশে বিভিন্ন জেলার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা। চলবে…..

 

ছবি পরিচিতি :

 

৩রা আগষ্ট মিজানুর রহমান মিজানের বাসায়বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলাপ্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষনায় আমরা যারা ছিলাম। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের কয়েকটি ছবি।

 

১।গ্রুপ ছবি()

২।গ্রুপ ছবি()

১। প্রথম সভাপতি শ্রী বিমান দা, প্রথম প্রধান উপদেষ্টা এম আনিসুজ্জামান প্রথম প্রধান পৃষ্ঠপোষক 

   মিজানুর রহমান মিজান।

২। মিজানুর রহমান মিজান এম আনিসুজ্জামান।

 

।১৫ আগষ্ট১৯৯০ সালে প্রথম কমিটির ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা   

  জানাতে যাচ্ছেন সদ্য প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার নেতৃবৃন্দ কয়েকজন শিশু কিশোর।

 

৪। যে ক্যামেরা দিয়ে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠার তারিখে মিটিংয়ের ছবি তুলেছি। 

 

৫। নব্বই সালে আমার সম্পাদিত রিনিঝিনি